• [english_date] , [bangla_date] , [hijri_date]

দেশে আওয়ামী লীগ নেতার হুমকী ॥ যুক্তরাজ্যে স্ত্রী ছেড়ে পালালেন স্বামী

Sonaly Sylhet
প্রকাশিত December 31, 2021
দেশে আওয়ামী লীগ নেতার হুমকী ॥ যুক্তরাজ্যে স্ত্রী ছেড়ে পালালেন স্বামী

বিয়ানীবাজার প্রতিনিধিঃ
বিয়ানীবাজার আওয়ামী লীগ নেতা কাওছার আহমদের হুমকীর কারণে সদ্য বিবাহিত যুক্তরাজ্য প্রবাসী এক দম্পতির সুখের সংসারে ভাঙ্গন ধরেছে। যুক্তরাজ্যের লন্ডন সিটিতে বসবাসকারী ঐ দম্পতির স্বামী সাইদুল মাহমুদ গত ৩০ ডিসেম্বর স্ত্রী ছায়রা বেগমকে বাসায় রেখে কোন কিছু না বলে হঠাৎ করে উধাও হয়ে গেছেন। গত এক সপ্তাহ থেকে স্বামীর কোন সন্ধান না পেয়ে হতাশায় দিন কাটছে স্ত্রী ছায়রা বেগমের। এতেকরে দেশে থাকা স্বামী-স্ত্রী দুই পরিবারের মধ্যে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
ছায়রা বেগমের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত বছর ২০ অক্টোবর পারিবারিক ভাবে বিয়ানীবাজার উপজেলার পূর্ব মুড়িয়া এলাকার আষ্টঘরী গ্রামের মৃত আকদ্দছ আলীর কন্যা ছায়রা বেগমের বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী বড়লেখা উপজেলা পাঁচপাড়া গ্রামের এবাদুর রহমানের পুত্র যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইদুল মাহমুদের সঙ্গে। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান সাইদুল মাহমুদ। যুক্তরাজ্যের লন্ডন সিটিতে নব দম্পতির সংসার জীবন ভালই চলছিল। কিন্তু ছায়রা বেগমের সুখের সংসারে ফের কাটা হয়ে হাজির হন বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কাওছার আহমদ। এই কাওছার আহমদের প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় তাকে অপহরণ করার হুমকী দেন কাওছার। কাওছার আহমদের প্রতিনিয়ত উত্যক্তকরণ ও হুমকীর কারণে কলেজের পড়াশুনা ছেড়ে দিতে হয় ছায়রা বেগমকে। পরে তড়িঘড়ি করে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় সাইদুল মাহমুদের সাথে। কিন্তু বিয়ের পরও ছায়রা বেগমের পিছু ছাড়েন নি আওয়ামী লীগ নেতা কাওছার। বিয়ের পর ছায়রা বেগমের পিত্রালয়ে দলবল নিয়ে গিয়ে তার মা ও পরিবারের সদস্যদের গালাগালি করে নানা হুমকী দিয়ে এসেছেন কাওছার। এদিকে বড়লেখা আওয়ামী লীগের চিহ্নিত কয়েকজন ক্যাডারকে সাথে নিয়ে গত ৫ ডিসেম্বর ছায়রা বেগমের শশুর বাড়ি বড়লেখা উপজেলার পাঁচপাড়া গ্রামে যান কাওছার আহমদ। ছায়রা বেগমের শশুর-শাশুড়ি ও পরিবারের সদস্যদের কাছে তাদের পুত্রবধূ সম্পর্কে মনগড়া নানা অপবাদ দিয়ে কাওছার ও তার সাথে থাকা আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা হুমকী দেন সাইদুল মাহমুদ যদি ছায়রা বেগমের সঙ্গ না ছাড়েন তাহলে তাকে এবং তার পরিবারকে চরম ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে বলে। তাছাড়া তারা যখনই দেশে আসবে তখনই তাদেরকে গুম কিংবা খুন করা হবে বলে প্রকাশ্যে হুমকী দেন তারা।
এ ঘটনার পর সাইদুল মাহমুদের পরিবার আতংকিত হয়ে পড়েন। বিষয়টি সাইদুল মাহমুদ ও ছায়রা বেগমের পারিবারকে জানানো হয়। এ অবস্থায় গত ৩০ ডিসেম্বর স্ত্রী ছায়রা বেগমকে কোন কিছু না বলেই হঠাৎ করে লন্ডন সিটির বাসা থেকে উধাও হয়ে গেছেন সাইদুল মাহমুদ। সম্ভাব্য সকল জায়গায় যোগাযোগ করেও স্বামীর কোন সন্ধান পাচ্ছেন না ছায়রা বেগম। লন্ডন পাড়ি দেয়ার এখনো ৩ মাস হয়নি। এ অবস্থায় এখন তিনি কি করবেন, না করবেন ভেবে না পেয়ে হতাশায় মুচড়ে পড়েছেন। বাড়িতে থাকা তার পরিবারের সদস্যরাও তাকে নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় দিনাতিপাত করছেন।
ছায়রা বেগমের মা রানী বেগম এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপ কালে কান্না ও ক্ষোভ জড়িত কন্ঠে বলেন, এই কাওছারের কারণে আমার মেয়ের জীবনটা ধ্বংস হয়ে গেল। তার কারণে আমার মেয়ের কলেজে পড়া বন্ধ হল, এখন তার সুখের সংসারটাও নষ্ট করে দিল।
সাইদুল মাহমুদের বাবা এবাদুর রহমান আওয়ামীলীগ নেতা কাওছার ও তার ক্যাডারদের হুমকীর কথা স্বীকার করে বলেন, ছায়রা মেয়েটা আমার ছেলের জীবনটা একবারে নষ্ট করে দিয়েছে, তার সম্পর্কে এখন যা শুনতেছি তা ভাবতেও কষ্ট হচ্ছে আমাদের। মেয়েটা দেশে আকাম কুকাম করেছে, বিদেশে গিয়েও নিজের মন্দ চরিত্র হাসিলের জন্য আমার ছেলেকে ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এখন দেশে আমরা ও বিদেশে আমার ছেলে তার অপকর্মের খেসারত দিতে হচ্ছে।