• [english_date] , [bangla_date] , [hijri_date]

ছাতকে গোবিন্দগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ  সুজাত আলী রফিকের পদত্যাগ

Sonaly Sylhet
প্রকাশিত August 19, 2024
ছাতকে গোবিন্দগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ  সুজাত আলী রফিকের পদত্যাগ

ছাতক প্রতিনিধি🖊

সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ আব্দুল হক স্মৃতি ডিগ্রী কলেজের অবৈধ অধ্যক্ষ দীর্ঘ ১৩ বছর ধরেই সিলেটের জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সুজাত আলী রফিক ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দখল করেছিল। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে অবশেষে পদত্যাগ করেছেন বহুল আলোচিত ও সমালোচিত সেই বিতকিত ব্যক্তি সুজাত আলী রফিক অধ্যক্ষের পদত্যাগ করেছেন।

গত রোববার দুপুরে কলেজের ভাইন্স পিন্সিপাল মহি উদ্দিন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে পদত্যাগ পত্র জমা দিলে ও কলেজ আয়-ব্যয় হিসার পওে দেবেন তিনি।  গত ১৫ আগষ্ট সন্ধ্যা অধ্যক্ষ পদ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দেন কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি এডভোকেট রাজ উদ্দিনের কাছে। অধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করলেও ভাইন্স পিন্সিপাল মহি উদ্দিনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করা হয়েছে।  অধ্যক্ষ সুজাত আলী তার আবেদনে লেখেন- তিনি কলেজ অধ্যক্ষ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দুটি পদেও মধ্যে অধ্যক্ষ পদ থেকে পদত্যাগ পত্র জমা দেয়া হয়। বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কলেজ পরিচালনায় অত্যধিক মানসিক চাপ অনুভব করছেন তিনি। যা এক ব্যক্তি জন্য দুটি পদ ঝুঁকিপূর্ণ। তাই তিনি অধ্যক্ষের পদ থেকে  পদত্যাগ করছেন। এর আগে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা গত ১৫ আগষ্ট সকাল থেকে ভুয়া ভুয়া শ্লোগানে পদত্যাগের দাবিতে অধ্যক্ষ সুজাত আলীকে ৫ দিনের মধ্যে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে কলেজের আয় ব্যয় হিসাব দিতে হবে। ছাত্র-আন্দোলন চলাকালে অধ্যক্ষ খুনী সাবেক প্রধান মন্ত্রীর শেখ হাসিনা পক্ষে কাজ করার নিদেশনা দিয়ে কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরন করেছিলেন। সেই থেকে তার পদত্যাগের দাবি করছিলেন শিক্ষার্থীরা। জানা গেছে,গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগের পরে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ আব্দুল হক স্মৃতি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ সিলেটের জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সুজাত আলী রফিক আত্মগোপনে যান এবং আত্মগোপনে থেকে তিনি শিক্ষার্থী ও জনদাবীর পরিপ্রেক্ষিতে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেয়ার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন ভাইন্স পিন্সিপাল মহি উদ্দিন ।

কলেজ সুত্রে জানয়,সাবেক সরকার দলীয় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সুজাত আলী রফিক এ কলেজে ১৯৯৬ সালের ২৯ ফেরুয়ারি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। চাকরিরত অবস্থায় ২০০৬ সালের ২৩ জুন তিনি যুক্তরাজ্যে যাওয়ার জন্য কলেজ পরিচালনা কমিটির কাছে ছুটির আবেদন করলে পরদিন কমিটি তা মঞ্জুর করে। একই বছরের ২৩ আগস্ট তিনি আবার ছুটি বর্ধিত করার আবেদন করলে সেটিও মঞ্জুর করা হয়। কিন্তু তিনি নির্ধারিত সময়ে কলেজে যোগদান না করায় পরিচালনা কমিটি ২০০৭ সালের ৪ এপ্রিল ১৫দিনের মধ্যে তাঁকে যোগদানের জন্য চিঠি দেয়। কিন্তু তা না করে ১৭ এপ্রিল ছুটি বর্ধিত করার আরেকটি আবেদন করে। কমিটি এই আবেদন গ্রহণ না করে পরবর্তীতে একই বছরের ২ ডিসেম্বর কেন তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে না জানতে চেয়ে এই মর্মে নোটিশ দেয়। কিন্তু সুজাত আলী নোটিশের জবাব না দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর চাকরি থেকে অব্যাহতির আবেদন দেন কমিটির কাছে। কমিটি পরে ২০০৮ সালের ১০ জানুয়ারি সেটি গ্রহণ করে।মামলার আরজিতে বাদী আরও উল্লেখ করেন, সুজাত আলী চাকরি থেকে অব্যাহতি নেওয়ার প্রায় দুই বছর পর ২০১০ সালের ২০ মার্চ একটি সভা করে অন্য আসামিরা ২০০৭ সালের ১৬ ফেরুয়ারি থেকে ২০১০ সালের ২৩ মার্চ পর্যন্ত সুজাত আলীর অনুপস্থিতিকে অসাধারণ ছুটি দেখিয়ে বেআইনিভাবে তাকে পুনরায় চাকরিতে স্বপদে বহাল করেন। কমিটির এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্থানীয় বাসিন্দা এই মামলার ১৮ নম্বর স্বাক্ষী আশিকুর রহমান হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন (৪৭৩৩/২০১০) দায়ের করেন। আদালত ২০১০ সালে ৬ ডিসেম্বর পরিচালনা কমিটির এই সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করেন। সুজাত আলী পরে হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে আপীল করলে ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি সেটি খারিজ হয়ে যায়। পরবর্তীতে মাধ্যক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর আদালতের এই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সুজাত আলীর বেতন-ভাতা স্থগিতের জন্য কলেজ পরিচালনা কমিটিকে চিঠি দেয়। কিন্তু কমিটি সেটি করেনি। এলাকাবাসী পক্ষে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল জানান,সাবেক এমপি মানিক ও অবৈধ অধ্যক্ষ সুজাত আলী মিলে কলেজ ফান্ডের কোটি কোটি টাকার লুটপাট ও আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। অধ্যক্ষ পদ থেকে পদত্যাগ জমা দিলে ও কলেজ ফান্ডের আয়-ব্যয় হিসাব দেয়নি দুনীতিবাজ অবৈধ অধ্যক্ষ সুজাত আলী। এ কলেজ আয়-ব্যয় বিভিন্ন ফান্ডে এমপি মানিক ও সুজাত আলী  মিলে দুর্নীতির মাধ্যমে বেআইনিভাবে সরকারের বিপুল পরিমান টাকা আত্মসাত লুটপাটের অভিযোগ করেন তিনি।