হজের নিবন্ধনে বাড়ানো তিন দফা সময় বাড়িয়েও হজযাত্রী কাঙ্খিক সংখ্যায় অবেশেষ চতুর্থ দফায় সময় বাড়ানো হলো। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে। আজ শুক্রবার বিকেলে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হজ) মতিউল ইসলাম সমকালকে এ তথ্য জানান।
এর আগে সর্বেশষ তৃতীয় দফায় ২৫ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও হজযাত্রী ও এজেন্সিগুলোর অনুরোধে সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছিল মন্ত্রণালয়। দফায় দফায় এর আগে সময়সীমা বাড়িয়েও চলতি মৌসুমে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ নিবন্ধনে হজযাত্রীদের সাড়া মেলেনি।
এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। সৌদি আরবের সঙ্গে হজ চুক্তি অনুযায়ী এখনও অনেক আসন ফাঁকা রয়েছে।
গত বছরের ১৫ নভেম্বর থেকে এবারের হজ নিবন্ধন শুরু হয় এবং সময়সীমা ছিল গত ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরে হজ নিবন্ধনের সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়।
সৌদি আরবকে এবারের হজযাত্রীর সংখ্যা জানানোর তাগিদ থাকায় নিবন্ধনের সময় আর বাড়ানো হবে না বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়। কিন্তু হজ এজেন্সিগুলোর চাপে শেষ পর্যন্ত হজের নিবন্ধনের সময় আবারও বাড়ানো হলো।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন (১৪৪৫ হিজরি সনের ৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের মতো এবারও বাংলাদেশের হজযাত্রীর কোটা এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এজেন্সির মাধ্যমে এক লাখ ১৭ হাজার জন হজ পালন করতে পারবেন। চলতি বছর হজ পালনে সৌদি সরকারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হয় গত ৮ জানুয়ারি।
শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে হজ পোর্টাল থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৭৯ হাজার ৮৬৩ জন হজযাত্রী নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ১৬৫ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭৫ হাজার ৬৯৭ জন। সেই অনুযায়ী, এখনো ৪৭ হাজার ৩৭৭ জন এখনো নিবন্ধন করেননি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলালকে শুক্রবার দেওয়া হজ এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) মহাসচিব ফারুক আহমদ সরদার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে পুনরায় হজের নিবন্ধন সময় বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছিল। চিঠিতে বলা হয়, গত ৩১ জানুয়ারি হজযাত্রী নিবন্ধন সার্ভার ডাউন থাকার কারণে অনেক হজযাত্রীর নিবন্ধন করা সম্ভব হয়নি। ২০২৪ সালের হজযাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধিকল্পে, সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে, আল্লাহর মেহমান হজযাত্রীদের কল্যাণে হজযাত্রী নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য মন্ত্রীকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয় এ চিঠিতে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিশ্বের অধিকাংশ দেশ তাদের হজযাত্রীর সংখ্যা জানিয়ে দিয়েছে সৌদি আরবকে। কিন্তু বাংলাদেশ এখনো জানাতে পারেনি। হজযাত্রীর সংখ্যা চূড়ান্ত না হওয়ায় বাংলাদেশের নামে মিনায় তাবু বরাদ্দ হয়নি। সংখ্যা জানাতে আরও দেরি করলে মিনায় অনেক দূরে তাবু নিতে হবে, যা হজযাত্রীদের ভোগান্তির কারণ হবে।
এবার সরকারি ও বেসরকারিভাবে হজে যেতে সর্বনিম্ন খরচ কুরবানিসহ প্রায় ৬ লাখ টাকা। যদিও গত হজের খরচের তুলনায় এটা অনেকটা কম।
সরকারিভাবে আগামী বছর হজে যেতে সাধারণ প্যাকেজে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। বিশেষ হজ প্যাকেজের মধ্যমে হজ পালনে খরচ হবে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা। সাধারণ প্যাকেজে চলতি বছরের চেয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রায় প্রত্যেক হজযাত্রীর ৯২ হাজার ৪৫০ টাকা কম খরচ হবে।
অন্যদিকে বেসরকারিভাবে এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে সাধারণ প্যাকেজে হজ পালনে সর্বনিম্ন খরচ হবে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা। বিশেষ প্যাকেজের মাধ্যমে হজ পালনে খরচ হবে ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৩০০ টাকা। চলতি বছরের তুলনায় খরচ কমেছে ৮২ হাজার ৮১৮ টাকা। সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনার সব হজযাত্রীকে কুরবানির খরচ আলাদা করে নিতে হবে।