• [english_date] , [bangla_date] , [hijri_date]

কানাডায় যারা আসবেন ভেবে দেখবেন

Sonaly Sylhet
প্রকাশিত February 1, 2024
কানাডায় যারা আসবেন ভেবে দেখবেন

কাজী হালিমা আফরীন

প্রথমেই আমি বলে নিচ্ছি কানাডা এখন বিশাল চ্যালেঞ্জিং দেশ বিভিন্ন ধরণের স্ট্যাটাসের মানুষের কাছে বিভিন্নভাবে। তবে এখানে অবশ্যই দুই ধরণের মানুষের বসবাস।

 

এক. যারা আগে এসেছেন, অনেকেই ভালো পজিশনে আছেন। তবে তারা কেউই কিন্তু এখানে এসেই রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে পড়েন নি, যদি না কেউ দেশ থেকে সঙ্গে করে মিলিয়ন ডলার না এনে থাকেন। যারা দেশ থেকে এদেশে এসেছেন তারা দেশে যে অর্থনৈতিক অবস্থাতেই থাকেন না কেনো এদেশে এসে যদি বসে না খেতে চান তাহলে কাজ অবশ্যই করতে হবে। তবে নিজের যোগ্যতা ও চেষ্টা অনুযায়ী কাজ পাওয়া যাবে। আগে যারা এসেছেন তাদের জন্যও কানাডায় পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে ফেডারেল মিনিস্ট্রিতে কাজ রেডি ছিল না। ওনাদের খুঁজে বের করতে হয়েছে। পোড়াশোনা করতে হয়েছে। দুই জন মিলে কাজ করেছেন। আস্তে আস্তে তাদের অনেকেই এখন মোটামুটি ভালোই পজেশনে আছে। কেউ কেউ কানাডার বড়ো বড়ো চাকরিতেও আছেন। তবে আগে যারা এসেছেন তাদের সবাই যে এমন ভালো পজেশনে যেতে পেরেছেন তা কিন্তু  নয়। যার হয় না তার একও হয় না, একশোতেও হয় না। যারা ভালো অবস্থায় আছেন তাদের কিন্তু  তেমন কোনো সমস্যা ফেস করতে হচ্ছে না। দেশের চলমান অবস্থা যতই চলার জন্য বিপরীত মুখি হোক ওনারা আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছেন। আর এই ভালো থাকার পেছনে রয়েছে অনেক ত্যাগ, কষ্ট ও চেষ্টা। তবে যারা ইমিগ্রান্ট স্ট্যাটাস নিয়ে এসেছেন তারাই এই ভালো থাকার মানুষের গ্রুপে আছেন। আছেন স্টুডেন্ট বা ওয়ার্ক পারমিটে আসা মানুষেরাও।

 

দুই, বর্তমানে কানাডায় ইমিগ্রেশনের চেয়ে অন্যান্য স্ট্যাটাসের মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। তার মধ্যে স্টুডেন্ট, ভিজিট ভিসা ও ওয়ার্ক পারমিট স্ট্যাটাস। ভিজিট ভিসায় এসেই asylum seek করা এখন যেন নিয়মে দাঁড়িয়ে গেছে। তাতেও সমস্যা নেই। কিন্তু মারাত্মক সমস্যা হয়ে যাচ্ছে আসার পর যখন চাহিদা মতো কিছু করতে পারছেন না। যারা asylum seek করছেন তারা lawyer এর কাছে বিশাল বড়ো একটা টাকায় ধরা খাচ্ছেন শুরুতেই। তারপর আছে থাকা-খাওয়া ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় খরচ। শুনেছি সরকার asylum seeker দের একেক জনের জন্য দিচ্ছেন $750 cad করে মাসে। এটা নেই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো এমন হলেও বর্তমানে নূন্যতমভাবে টিকে থাকার জন্য যে অর্থ দরকার হয় সরকারের দেওয়া ঐ অর্থ কিছুই না। তাও হাজারে হাজারে asylum seeker দের বসিয়ে সরকার প্রত্যেকের ঐ টাকা দিয়ে যাচ্ছেন। সরকার তো আর কাউকে ইনভাইট করেন নি যে আপনারা সবাই ভিজিট ভিসায় এসে asylum seek করেন। যারা করে ফেলেছেন সরকার তাদেরকেও আর্থিক সাহায্য করছেন এটাই বড়ো কথা।

 

 

নম্বর ২ এ যেসব স্ট্যাটাসের মানুষের কথা বললাম সবাই ব্যক্তিগতভাবে রয়েছে ভীষণভাবে উৎকন্ঠায়। নেই চাকরি, ভালো বাসা বা খাবারের টাকা। এমন হওয়ার কারণ হলো এখানে আসার পর যে কোনো স্ট্যাটাসের মানুষের জন্য যেটা সবার আগে দরকার সেটা হলো একটা চাকরি। তো যাদের চাকরি করার পপারমিট নেই তারা তো সব জায়গাতেও চেষ্টা করতে পারছেন না একমাত্র ক্যাশে কাজ করা ছাড়া। সেটাও এখন সোনার হরিণ।

 

যারা নিউ ইমিগ্রান্ট এসেছেন বা আসবেন তাদের অন্তত একটা চিন্তা মুক্ত। সেটা হলো লিগ্যাল কাগজের জন্য ফাইট করতে হবে না। pr এর জন্য চিন্তা নেই। কিন্তু বাকি স্ট্যাটাসের প্রত্যেকে সেই চিন্তা আছে। এটা এখন মানসিক দুশ্চিন্তার প্রধান কারণ।

 

 

যারা ইমিগ্রান্ট হয়ে আসবেন তাদের জন্য অন্যান্যদের চেয়ে একটু সুযোগ-সুবিধা বেশি। যেমন, আপনি ইচ্ছে করলেই সরকারের কাছ থেকে লোন নিয়ে পড়তে পারবেন। বাকিরা লোন নিয়ে পড়তে পারবে না। তারপরে pr হোল্ডালরা যেকোনো জায়গায় কাজ চেষ্টা করতে পারবেন যেটা অন্যান্য স্ট্যাটাসের মানুষের জন্য লিমিটেশন আছে। ওয়ার্ক পারমিটে যারা আসেন তাদের থাকে close work oermit. কাজেই সব  employer এর অধিনে কাজ করার পারমিশন থাকে না।

 

 

কাজেই দেশ থেকে আসার আগে একটু চিন্তা করে নেবেন কোনটা বেছে নেবেন। এখানে আসার সঙ্গে সঙ্গে কেউই একেবারেই স্বর্গে বাস করতে পারে না। অনেক সময় লাগে। তবে চেষ্টা করে টিকে থাকলে হয়তো কেউ কেউ স্বপ ছুঁতে পারেন।

 

(লিখেছেন- কানডার টরন্টো থেকে)