• [english_date] , [bangla_date] , [hijri_date]

রাতে হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে উঠে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, গুলি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের ডাক

Sonaly Sylhet
প্রকাশিত July 15, 2024
রাতে হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে উঠে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, গুলি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের ডাক

✒অনলাইন ডেস্ক

রাতে হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে উঠে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস গুলি, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের ডাক

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে মধ্যরাতে উত্তাল হয়ে ওঠেছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থেকে মিছিল নিয়ে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া একই সময়ে দেশের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল-স্লোগানে ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষর্থীরা।
রোববার (১৪ জুলাই) বিক্ষোভের শুরু হয় রাত ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে। এতে বিভিন্ন হলের প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী মাঠে নেমে পড়েন। রাত ১২টার দিকে টিএসসিতে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী সমবেত হন। বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দেন। আধা ঘণ্টা পর তারা আবার টিএসসিতে চলে যান।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাসে ‘তুমি কে? আমি কে? রাজাকার রাজাকার’ স্লোগান চলছে। রোববার  (১৪ জুলাই) রাত ১১ টা থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বট তলায় বিভিন্ন হল থেকে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা ‘তুমি কে? আমি কে? রাজাকার রাজাকার’ স্লোগান দিতে থাকেন। এসময় প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী মাঠে নেমে পরেন।
এরপর রাত সাড়ে এগারোটার দিকে শিক্ষার্থীরা একত্রে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যান এবং সেখানে অবস্থান করেন। 

জানা যায়,  ‘তুমি কে? আমি কে? রাজাকার রাজাকার ‘ এই স্লোগান দেওয়ার জন্য বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের দুই আবাসিক শিক্ষার্থীকে অবরুদ্ধ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মূলত ওই দুই শিক্ষার্থীকে অবমুক্ত করার জন্যই সকল শিক্ষার্থীরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের সামনে অবস্থান নেয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী তৌহিদ সিয়াম বলেন,  ‘আমাদের কাছে তথ্য এসেছে যে আমাদের দুইজন শিক্ষার্থী ভাইকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবরুদ্ধ করে রেখেছে। আমরা মূলত তাদেরকে নিয়ে যাওয়ার জন্যই এখানে এসেছি।’

এই প্রতিবেদন লেখা পর্য়ন্ত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের সামনে অবস্থান করছেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’ স্লোগানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের একটি বড় মিছিল তাঁতিবাজার মোড়ে এসে থেমেছে। রোববার (১৫ জুলাই) রাত পৌনে ১২টায় মেয়েরা হল থেকে ও আশেপাশের মেস থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে জড়ো হয়। এরপর তারা ১২ টা বেজে ১৫ মিনিটে তাঁতিবাজার মোড় অবরোধ করে। প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত তাঁতিবাজার ছেড়েছে শিক্ষার্থীরা।
এসময় রাসেল নামে তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের দাবিগুলো যৌক্তিক। দেশ ও নাগরিক কল্যাণে এটি প্রয়োজন।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
‘রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানে মিছিল হয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে। রোববার (১৪ জুলাই) রাত ১১টায় ছেলেদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল থেকে ‘রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানে মিছিল দিতে দিতে শিক্ষার্থীরা মূল ফটকে আসে। এরপর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুবি শাখার নেতৃত্বে আরেকটি মিছিল বের হয়।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের দুটি হলেও আলাদা আলাদা সময়ে একই স্লোগান দেয়া হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা থালা-বাটি ব্যবহার করেন।

হল ও মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘তুই কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার, একাত্তরের রাজাকার, গর্জে উঠ আরেকবার, তুই বেটা রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়, চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার, শেখ হাসিনার বাংলায়, রাজাকারের ভয় নাই, তোমার আমার পরিচয়, রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে, সরকার সরকার’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ফরহাদ কাউসার নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের নতুন পরিচয় হয়েছে সেই খুশিতে আজকে বের হয়েছি। আমরা রাজাকার সেটা সাদরে গ্রহণ করলাম।’
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
‘তুমি নই আমি নই রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানে প্রকম্পিত হয়েছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) ক্যাম্পাস। রোবার (১৪ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মশিয়ূর হলে এ স্লোগানের রব উঠে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের চারটি ব্লকের শিক্ষার্থীরা হঠাৎ বের হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন। স্লোগানে স্লোগানে সরগরম হয়ে ওঠে হল। এক পর্যায়ে মিছিলটি হল থেকে বের হয়ে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্লোগান দিতে দিতে প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকের সামনে এসে নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকে।
রাত সাড়ে ১২টার দিকে মিছিল শেষ হয়। আগামীকাল পরবর্তী সীদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত জানিয়ে মিছিল শেষ করেন শিক্ষার্থীরা।