আপেলের মতো দেখতে লাল টুকটুকে বড় বড় বরই ঝুলছে গাছে। বাগানের চারদিকে তাকালে শুধু বরই আর বরই। ছোট গাছগুলো বরইয়ের ভারে নুইয়ে পড়েছে। প্রথম বছরেই লক্ষণীয় সাফল্য পেয়েছে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার সিমান্তবর্তী সিন্দুরআটা গ্রামের তিন বন্ধু। তিন জনই উচ্চশিক্ষিত যুবক। চাকরি না পেয়ে তারা ১০ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন বড়ই ও লেবুর বাগান।
বাগান মালিক সুত্রে জানা যায়, সরিষাবাড়ীর সীমান্তবর্তী দূর্গম চরাঞ্চল নামে খ্যাত সিন্দুরআটা গ্রাম। বার্ষিক চুক্তিতে ১০ বিঘা জমিতে যমুনা ফোর স্টার এগ্রো ফার্মের নামে মাজেদুর রহমান মোহন, রাজু সরকার, আবু সাঈদ কাকন মিলে শুরু করে বড়ই বাগান ও লেবুর চাষ।
২০২২ সালের অক্টোবর এই বাগানের কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতে অস্ট্রেলিয়ান বল সুন্দরী, ভারত বল সুন্দরী, বাউকুল, দেশি জাতের টক মিষ্টি ১ হাজার ৭০ টি গাছ লাগান তারা৷ এছাড়া বাগানের চারপাশে চায়না সিডলেস ৩ বারোমাসী ৫০০ টি লেবু গাছ লাগানো হয়। নিজেরা কিছু করার চিন্তায় ১০ বিঘা জমির ওপর এই মিশ্র বাগানটি গড়ে তুলেছেন তারা। পুরো চাষাবাদে বাগানে ব্যবহার করা হয়েছে স্থানীয় ভাবে গরুর গোবর দিয়ে তৈরি জৈব সার। ফলে গাছ লাগানোর প্রায় ১২ মাসের মধ্যেই তাদের বাগানের প্রতিটি গাছে বাম্পার ফলন হয় বরই ও লেবুর।
আপেলের মতো দেখতে লাল টুকটুকে বড় বড় বরই শোভা পাচ্ছে তাদের গাছে। বাগানে বরই এবং লেবুর ভালো ফলন দেখা যাচ্ছে। এরই মধ্যে বাগানের গাছ থেকে বরই তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। দেখতে সুন্দর ও স্বাদে সুমিষ্টি হওয়ার কারণে তাদের বরই ৪ হাজার টাকা মণে বিক্রি হচ্ছে। এই বাগানের উদ্যোক্তারা আশা করেছে চলতি মৌসুমে এখানে থেকে পায় ৩০০ মণ বরই বিক্রি করবেন। যা থেকে তারা প্রথম বছরেই প্রায় ১২ থেকে ১৪ লক্ষ টাকা আয় করার সম্ভাবনা দেখছেন তারা। একই সঙ্গে তাদের বাগান থেকে বারোমাসি লেবু বিক্রি করছেন তারা। বারোমাসি জাত হওয়ার কারনে সারা বছরই এই লেবু বিক্রি করতে পারবেন বলেও জানান মালিকরা।
বাগানে ঘুড়তে আসা রনি আহাম্মেদ ও শিপু মারুফ বলেন, আমাদের এই দূর্গম চরের মধ্যে এতো সুন্দর বড়ই ও লেবু বাগান হয়েছে সেটা হয়তো না দেখলে কখনোই বিশ্বাস করতাম না। এখানে এসে এসে ভালো লেগেছে।
বাগানের উদ্যোক্তা মোহন, রাজু ও কাকন বলেন, আমরা তিন বন্ধু মিলে নিজেরা কিছু করব এমন চিন্তায় চরাঞ্চলে ১০ বিঘা জমির ওপর এই মিশ্র বাগানটি গড়ে তুলেছি। পুরো চাষাবাদে আমরা দেশীয় জৈব সার ব্যবহার করেছি। ফলে আমাদের বাগানে বরই ও লেবুর ভালো ফলন পেয়েছি। প্রথম বছরেই বরই বিক্রি করে আমরা ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকার বড়ই ও লেবু বিক্রির আশা করছি। এই সাফল্যের পর আমরা পার্শ্ববর্তী কৃষি জমিতে বাগানের জায়গা বাড়িয়ে আরও বড়ই ও লেবু গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছি। শিক্ষিত বেকার যুবকরা যদি বসে না থেকে আমাদের মতো কৃষিকে পেশা হিসেবে নেয় তবে তারাও নিজেরা স্বাবলম্বী হতে পারবে।