সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। বৃহত্তর সিলেটের কোটি কোটি মানুষের সরকারী স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসা। প্রতিদিনই নানা রোগ-বালাই নিয়ে হাসপাতালটিতে আসেন হাজার-হাজার রোগী। এমনকি পার্শ্ববর্তী বি-বাড়িয়া ও নেত্রকোনা জেলা থেকে রোগীরা আসেন সিলেটের এই সরকারী হাসপাতালে। এবার এই হাসপাতালে রোগীদের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে যুক্ত হলো ডিজিটাল পদ্ধতি।
রোগীদের ভোগান্তি কমাতে অটোমেশনের আওতায় এলো এই হাসপাতাল। এখন থেকে অনলাইন রোগী নিবন্ধন হবে। এর মধ্যে দিয়ে দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে ওসমানীই প্রথম ‘ডিজিটাল হাসপাতাল’ হিসেবে রূপ নিলো।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি।
এসময় তিনি বলেন, এই জিডিটাল স্বাস্থ্যসেবা চালুর মাধ্যমে রোগীরা এখন সহজে সেবা নিতে পারবেন। তাদের পুরোনো সকল তথ্য চিকিৎসকরা এক ক্লিকে পেয়ে যাবেন। এটা দেখবাল করার দায়িত্ব ওসমানী হাসপাতালের। আশাকরি ধাপে ধাপে আমরা পুরো দেশের সকল সরকারী হাসপাতালে এই সেবা চালু করবো।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের আঞ্চলিক পরিচালক মধুসূদন চন্দ।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
জানা গেছে, সিলেটকে স্মার্ট সিটি করতে ‘ডিজিটাল সিলেট সিটি’নামে প্রকল্প হাতে নিয়েছিলো বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল। এই প্রকল্পের আওতায় ওসমানী হাসপাতালে ‘হেলথ ম্যানেজমেন্ট অটোমেশন সিস্টেম’ চালু করা হয়। এর মাধ্যমে হাসপাতালে আগত সকল রোগীর ই-হেলথ রেকর্ড থাকবে। রোগীর সকল তথ্য ডাটাবেজে সংরক্ষিত হবে। এ কাজে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয় হবে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, অটোমেশনের আওতায় শুধুমাত্র রোগীদের তথ্য নয়; ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট, অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট ও সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টও করা হবে। এতে অনিয়ম অনেকাংশে কমে আসবে। এছাড়া টেলিমেডিসিন সেবা কার্যক্রমও চালু হবে। যার মাধ্যমে ফোনে চিকিৎসা পরামর্শ নিতে পারবেন যে কেউ।
সিলেট বিভাগের প্রধান স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ওসমানী হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ৯০০। তবে প্রতিদিন এই হাসপাতালে গড়ে ১৫ থেকে ১৬ শত রোগী ভর্তি থাকেন। এছাড়া বহির্বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নেন আরও প্রায় দুই হাজার রোগী। অভিযোগ আছে নানা অব্যবস্থাপনায় সেবা থেকে বঞ্চিত হন রোগীরা। বিশেষ করে নার্স, আয়া এমনকি সিকিউরিটি গার্ডের দ্বারাও হয়রানীর শিকার হতে হয় রোগী ও তাদের স্বজনদের। এতে প্রতিনিয়ত ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। তবে এবার হাসপাতালটিতে যুক্ত হওয়া ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা চালু হওয়ায় খুশি রোগী ও তাদের স্বজনরা।
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী সিলেটভিউকে বলেন, এখন থেকে রোগী একবার চিকিৎসা নিলে তার যাবতীয় তথ্য আমাদের ডাটাবেজে রেকর্ড থাকবে। ফলে চিকিৎসকের পক্ষে সঠিক সেবা প্রদান সহজতর হবে। রোগীরাও উপকৃত হবেন।