• [english_date] , [bangla_date] , [hijri_date]

পাইলটের বিচক্ষণতায় বাঁচল ২৯৭ প্রাণ

Sonaly Sylhet
প্রকাশিত January 22, 2024
পাইলটের বিচক্ষণতায় বাঁচল ২৯৭ প্রাণ

 

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট তানিয়া রেজার বিচক্ষণতা ও সাহসিকতায় বেঁচে গেল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজে থাকা ১২ জন ক্রুসহ ২৯৭ জনের জীবন।

শনিবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ নিয়মিত ফ্লাইটে সৌদি আরবের দাম্মামে যাচ্ছিল। সবকিছু চলছিল ঠিকঠাকভাবেই। ঘণ্টাখানেক চলে সেটি দেশের আকাশসীমা পেরিয়ে ভারতের আকাশসীমায় প্রবেশ করে। এর পরই দেখা যায় বিপত্তি। ককপিটের কাচে (উইন্ডশিল্ড) ফাটল চোখে পড়ে পাইলটের। শেষ পর্যন্ত উড়াল দেওয়ার দুই ঘণ্টা পর ফ্লাইটের ক্যাপ্টেন সেটি ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপদে ফিরিয়ে আনেন।

বিমান কর্মকর্তারা বলছেন, উড়োজাহাজে ২৮৫ যাত্রী ছাড়াও ১২ জন ক্রু ছিলেন। ফ্লাইটের ক্যাপ্টেন ছিলেন তানিয়া রেজা।

তানিয়া রেজার আরেক পরিচয় আছে। তিনি চিত্রনায়ক ও ঢাকা ১০ আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদের স্ত্রী।

কর্মকর্তাদের ভাষ্য, বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ ‘অচিন পাখি’ ঢাকা থেকে ওড়ার আগে নিয়ম অনুযায়ী চেক করা হয়, তখন সবকিছু ঠিকঠাক পেয়েই সেটি উড্ডয়নের অনুমতি দেওয়া হয়। উড্ডয়নের ঘণ্টাখানেক পর ক্যাপ্টেন উইন্ডশিল্ডে (ককপিটের কাচ) ফাটল দেখতে পান। এরপর তিনি এয়ারট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেটি ঢাকায় ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেন। ওড়ার দুই ঘণ্টা পর ভারতের আকাশসীমা থেকে অচিন পাখি নিরাপদে ঢাকায় ফিরে আসে। পরে ওই ফ্লাইটের যাত্রীদের অন্য ফ্লাইটে গন্তব্যে পৌঁছানো হয়।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার বলেন, উইন্ডশিল্ডে ফাটল ধরা উড়োজাহাজটি হ্যাঙ্গারে রয়েছে। বিষয়টি এরই মধ্যে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং কোম্পানিকে জানানো হয়েছে। এটি নিয়ে প্রকৌশলীরা কাজ করছেন।

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উইন্ডশিল্ড বা কাচে ফাটল ধরলে বা ভেঙে গেলে উড়োজাহাজের ভেতরে চাপ কমে যেতে পারে। এতে সেটি ভারসাম্যহীন হয়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে পারে। তবে এমন ঘটনা নতুন নয়। এর আগে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিমানের বোয়িং ৭৩৭-এর ককপিটের উইন্ডশিল্ড ফেটে গেলে সেটিকে মালয়েশিয়ায় গ্রাউন্ডেড করা হয়। ওই বছরের আগস্টে কাতারের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া আরেকটি বোয়িং ড্রিমলাইনার মাঝ আকাশে একই সমস্যার মুখোমুখি হয়। নিরাপদেই সেটিকে ভারতের আকাশসীমা থেকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়েছিল।

দেশের এই ঘটনা ছাড়াও চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি জাপানের অভ্যন্তরীণ রুটের একটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ উড্ডয়নের পর মাঝ আকাশে উইন্ডশিল্ডে ফাটল দেখতে পান পাইলট। পরে সেটি আবার হানেদা এয়ারপোর্টে নিরাপদে ফিরিয়ে আনা হয়।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি যুক্ত হয়। এর নাম দেওয়া হয় অচিন পাখি। এর আরও পরে সেটি ফ্লাইটে যায়।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস অ্যান্ড প্ল্যানিং বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ আর বিও কায়সার জামান বলেন, ‘এটা বোয়িংয়ের কোয়ালিটি ফল্ট। তাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। হয়তো আজকালের মধ্যেই নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে উইন্ডশিল্ড লাগানো হবে।