মোস্তাক আহমেদ মনির :
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে নাশকতার আশঙ্কায় জনগুরুত্বপূর্ণ ২ টি আন্তঃনগর ট্রেন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বন্ধ ট্রেন গুলো হলো ঢাকা থেকে তারাকান্দি গামী আন্তঃনগর অগ্নীবিনা এক্সপ্রেস ও আন্তঃনগর যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেন। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এ অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ।
জানা যায়, ১৯৮৭ সাল থেকে ঢাকা থেকে তারাকান্দি গামী আন্তঃনগর অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ও ১৯৮৮ সালে একই রুটে আন্তঃনগর যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হয়। এই ট্রেন দুইটি সরিষাবাড়ীর ইতিহাস ঐতিহ্যে মিশে আছে। এছাড়া ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারী আধুনিক সুযোগ সুবিধা সংবলিত আন্তঃনগর জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হয়। ঢাকা-সরিষাবাড়ী-তারাকান্দি রুটে যমুনা, অগ্নীবিনা ও জামালপুর এক্সপ্রেস এই তিনটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে।
অগ্নীবিনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকার কমলাপুর থেকে ময়মনসিংহ, জামালপুর, সরিষাবাড়ী হয়ে তারাকান্দি আসে। আবার সন্ধায় তারাকান্দি থেকে ঢাকার উদ্যেশ্যে ছেড়ে যায়, অপর দিকে বিকেল ৪ টা ৪৫ মিনিটে কমলাপুর থেকে একই রুটে সরিষাবাড়ী হয়ে তারাকান্দি আসে যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি। পরে রাত ২ টায় ঢাকার উদ্যেশ্যে ছেড়ে যায়। এছাড়া জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি তারাকান্দি-বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব-টাঙ্গাইল হয়ে নতুন রুটে ঢাকা-জামালপুরের মধ্যে আন্তঃনগর হিসেবে চলাচল শুরু করলেও পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব স্টেশনের উন্নয়ন কাজ শুরু হওয়ায় তারাকান্দি জামালপুর, ময়মনসিংহ হয়ে ঢাকায় চলাচল করে।
রাজনৈতিক নাশকতার কারনে গত বছরের ১৮ নভেম্বর রাতে ঢাকা থেকে তারাকান্দি গামী আন্তঃনগর যমুনা ট্রেনের ক, খ ও গ বগিতে আগুন দেয় দূবৃত্তরা। ২ ঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে ফায়ার সার্ভিস। পরে ১৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিকীর সাক্ষরিত এক পত্রে চলমান বিরূপ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নিরাপদ ট্রেন পরিচালনার জন্য যমুনা এক্সপ্রেস (৭৪৫/৭৪৬) ট্রেন জামালপুর-তারাকান্দি সেকশনে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে। আবার এ মাসের ৬ জানুয়ারী থেকে অগ্নীবিনা এক্সপ্রেস ট্রেনটিও বন্ধ করে দেয় কতৃপক্ষ। বর্তমানে বন্ধ হওয়া ২ টি ট্রেন ঢাকা-জামালপুর-ঢাকা সেকশনে চলাচল করছে।
এদিকে সরিষাবাড়ী-তারাকান্দি রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন এই রুটে চলাচলকারী হাজার হাজার যাত্রী। তাদের ২/৩ গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে বাধ্য হয়ে অন্য যানবাহনে করে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। সব থেকে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
একাধিক যাত্রী বলেন, ট্রেনে অন্য যানবাহনের থেকে কম ভাড়ায় যাতায়াত করা যায়। ট্রেন মুলত নিম্ন আয়ের মানুষদের একমাত্র যাতায়াতের মাধ্যম। তাই এই জনগুরুত্বপূর্ণ দুইটি ট্রেন বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ তথা আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষ চরম সংকটে পড়েছে। নিরাপদ ভ্রমন হিসেবে ট্রেনে আমরা কম টাকায় যাতায়াত করি। সরকারের আমাদের যাতায়াতের কস্টের বিষয়টির গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে কস্ট লাঘব করার জন্য অতিদ্রুত এই ট্রেন ২ টি চালুর দাবী জানাচ্ছি।