সুনামগঞ্জের প্রতিটি হাওরের ফাঁকে ফাঁকে আজো খানিক জায়গা দখল করে দাড়িয়ে রয়েছে হিজল গাছ।হিজল নামের দেশীয় গাছগুলো আজ বিলুপ্তির পথে।যাদের জন্ম শতাব্দী পেরিয়েছে।বয়স শতাব্দী পেরুলেও যতটুকু ডাল পালা থাকার কথা তা কিন্তু নেই।ষড়ঋতুতে জীবন বাজি রেখে হিজল গাছ গুলো দাড়িয়ে রয়েছে বুকচিরা শরীর নিয়ে। মাথায় আছে মাত্র গুটি কয়েক ডালপালা।হিজল গাছগুলো পরিবেশ তথা ফসল রক্ষায় যথেষ্ট ভুমিকা রেখে আসছে আজো।কেননা এই গাছের গর্তে বসবাসকারী পেঁচাগুলো ফসল বিনিষ্টকারী ইদুরকে নিধন করে থাকে।ভ্যাপসা গরমে দেয় কোমল শান্তির ছোয়া।
শরৎকালেই শুরুহয় হিজল গাছের মাথা মুড়ানো বা নিধনযজ্ঞ।এদের ডালপালা কেটে পুতে রাখা হয় জলাশয়ে।সম্প্রতি নদীপথে হিজলের ডালপালা কেটে স্থানান্তরিত করতে দেখা গেছে।এসব ব্যাবহার করে মা মাছ শিকারের জন্য সহায়ক হিসেবে। হাওরের বেশ কয়েকটি হিজল বাগের মধ্যে রয়েছে ফাস্সুয়া হিজল বাগ,টাঙ্গুয়া,রংচি,আবিদ নগর,দুগনই,দুলাশিয়া,সাহাপুর,মধ্যনগর(জমশেরপুর) সহ অসংখ্য নাম নাজানা ছোট বড় হাওরের উচু কান্দায় বা ভূমিতে গাছ গুলোর দেখা মিলে।বুকে গর্তনিয়ে দাড়িয়ে রয়েছে। জানা যায় এই গাছ গুলো রাজতন্ত্রের সময় তৎকালীন জমিদারদের পূর্বপুরুষগন রোপন করেছিলেন।যখন হাতী দিয়ে এলাকা পরিদর্শন করতেন।ঐসময় তাঁরা এসব হিজল গাছের গোড়ায় হাতী বেধে রাখতেন।এবং ছায়ার তলে বসে বিশ্রাম নিতেন।বর্তমানেও গ্রীষ্মের খড়ায় ক্ষেটে খাওয়া দিন মজুর ও ধান কর্তন,মকড়াই,শুকানো শ্রমিকদের দুপুরে দেয়া কোমর বাতাসে শান্তির ছায়া। কিন্তু প্রায় বছরেই মাথা মুড়িয়ে ডালপালা কেটে বিক্রি করে একশ্রেণী সুবিধাবাদী লোকজন।(বিগত বছর প্রশাসনিক দৃষ্টিতে কয়েকটি বাগ রক্ষা পেয়েছিল)সামান্য লাভের আশায় ধ্বংস করেছে হাওরের অতিপরিচিত ও বর্ষার মৌসুমে ঝড়ের কবলে পড়া নৌযানের সহায়তাকারী হিজল গাছ। হাওর গবেষক সজল কান্তি সরকারে মত বিলুপ্তির পথে হিজল গাছ যেন নিশ্চিহ্ন না হয় সেদিকে লক্ষ রাখা জরুরী। তাই হাওরাঞ্চলের বন ও পরিবেশ রক্ষায় এসব দেশীয় গাছের উৎপাদন বাড়াতে হবে।জৈষ্ঠ্যমাসে হিজলের বীজ পাওয়া এগুলো সংরক্ষণ করাও প্রয়োজন। উঁচু ভূমির হিজল গাছকে যেন মাথা মুড়িয়ে ধ্বংস না করা হয় সেদিকে প্রশাসনিক সুদৃষ্টি কামনা করেছেন বন ও হাওর গবেষক তথা বৃক্ষপ্রেমী লোকজন।তাই আসুন পরিবেশ রক্ষায় হিজল,করচ,কদম জাতীয় দেশীয় গাছকে ভালবাসি,গাছ লাগাই,পরিবেশ বাচাঁই।