সিলেট ২০শে জানুয়ারি, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই মাঘ, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ | ৭ই জমাদিউস সানি, ১৪৪২ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:১১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২০
নিজস্ব প্রতিবেদন
সিলেটের বহুল আলোচিত সেলিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি ডালিম মিয়া (২৯)সহ অপর এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব)-৯।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। প্রথমে সিলেট নগরের শামিমাবাদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডালিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নগরের শিবগঞ্জ মজুমদারপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় অপর অভিযুক্ত একই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মো. রাজীব হোসেন ওরফে রাজুকে (২৯)।
র্যাব-৯ এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর মো. শওকাতুল মোনায়েম এবং সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আনোয়ার হোসেন শামীমের নেতৃত্বে এ অভিযানটি পরিচালিত হয় বলে র্যাব সূত্রে জানা গেছে।
র্যাব আরো জানায়, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা খুনের সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করে নিয়েছেন। প্রধান অভিযুক্ত ডালিম গ্রেপ্তার এড়ানোর উদ্দেশে পুরান ঢাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ে একটি অবৈধ পলিথিন উৎপাদনকারী কারখানায় কিছুদিন চাকরি করার কথা এবং সর্বশেষ সুনামগঞ্জের ছাতকে মাটিকাটা শ্রমিক হিসেবে কাজ করার আড়ালে আত্মগোপন করে থাকার কথাও র্যাব কর্মকর্তাদের জানায়। এছাড়াও খুনের ঘটনাটি কোনো পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা নয় এবং জুয়া খেলা নিয়ে তাৎক্ষণিক উত্তেজনার এক পর্যায়ে তারা খুনের ঘটনাটি ঘটান বলেও র্যাবের নিকট স্বীকার করে।
উল্লেখ্য, গতবছরের ৭ নভেম্বর সিলেটের কাষ্টঘর মেথরপট্টির ছাদে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় লক্ষীপুর জেলার দত্তপাড়া গ্রামের ইসমাইল আলীর পুত্র সেলিম মিয়াকে (৩০) কে। ওইদিন সন্ধ্যা ৭টায় অজ্ঞাতনামা হিসেবে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে নিহতের পিতা বাদী হয়ে ডালিম (১ নম্বর আসামি) এবং রাজীব (৫ নম্বর আসামি) সহ মোট ৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এটাই ডালিমের প্রথম অপরাধ সংঘটনের ঘটনা নয়। গতবছরের ২৭ মে সিলেট শহরের কাষ্টঘর এলাকায় ডালিম মিয়াকে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করেছিল কোতোয়ালি থানা পুলিশ। ডালিমসহ আরো ২ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারের পর থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় তাদের সহযোগীরা পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে গুরুতর আহত করে। এর মধ্যে এএসআই সঞ্জয় ইটের আঘাতে মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। অজ্ঞান হবার পরও তাকে নির্মমভাবে পেটায় অপরাধীরা। অন্য কনস্টেবল জীবনের চোখের উপরের অংশ ফেটে রক্তপাত হতে থাকে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা দেখে বেশ ক’জন পুলিশ সদস্য পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করেন। পরবর্তীতে পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত ডালিমসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে পেনাল কোডের ১৪৩/৩৪১/ ৩৩২/৩৩৩/ ৩৫৩/ ১৮৬/১১৪ এবং ৩৪ ধারায় কোতোয়ালি থানায় মামলা রুজু করা হয়।
ডালিম একাধিক হত্যার মামলারও অভিযুক্ত আসামি। মাদক ব্যবসায়, ছিনতাইসহ অন্যান্য অভিযোগেও তার বিরুদ্ধে অনেক মামলা চলমান রয়েছে বলে জানা যায়। সবমিলিয়ে সিলেটের অপরাধজগতের অতি পরিচিত এক নাম এই ডালিম মিয়া। শুধু তাই নয়, ডালিমের স্ত্রী আনু বেগমও একজন মাদক ব্যবসায়ী এবং একাধিক মাদক মামলার আসামি বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে র্যাবের এএসপি আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, ‘এ চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত খুনিদেরকে গ্রেপ্তার করতে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করি আমরা। তাদের বিভিন্ন অবস্থানস্থলে নজরদারি চালানোর পর অবশেষে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হলো।’
এ খুনের সঙ্গে জড়িত অন্য ব্যক্তিদেরকেও আইনের আওতায় আনার প্রত্যয় ব্যক্ত করার পাশাপাশি এ ধরনের অভ্যাসগত অপরাধীদের (হ্যাভিচুয়াল অফেন্ডার) সামাজিকভাবে বয়কট করার আহ্বান জানান এ র্যাব কর্মকর্তা।
নিহত সেলিমের বাবা ইসমাইল আলী র্যাবকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘ছেলেকে তো আর ফেরত পাব না। এখন খুনি যেন উপযুক্ত শাস্তি পায়, খুনি যেন আর কোনোদিন কোনো বাবা-মায়ের বুক খালি করার সাহস না পায়, এটাই আমাদের একমাত্র চাওয়া।’
গ্রেপ্তারকৃত আসামি ডালিম মিয়া এবং রাজীব হোসেনকে পরবর্তী আইনগত কার্যক্রমের জন্য সিলেট কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুনপ্রধান সম্পাদক : মোঃ উস্তার আলী,
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ তাজুল ইসলাম,
বার্তা সম্পাদক : আব্দুল খালিক।
সম্পাদক কর্তৃক বার্তা অফসেট প্রেস, লিয়াকত ভবন, জল্লারপাড় রোড, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও ৩/১৭, সুরমা মার্কেট (২য় তলা), সিলেট থেকে প্রকাশিত।
মোবাইল : ০১৭১১-৩৯৯৬৬৬, ০১৭৩৩-৫৭৫৯২০ (সম্পাদক ও প্রকাশক)
০১৭২২-৯৪০২১৬ (বার্তা সম্পাদক)।
ই-মেইল : sonalysylhet2016@gmail.com
Web : www.sonalysylhet.net
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি