নিউইয়র্কের কুইন্সসেন্ট্রালে জাতির পিতার শততম জন্মদিন উদযাপন

প্রকাশিত: ৮:৩২ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১৮, ২০১৯

নিউইয়র্কের কুইন্সসেন্ট্রালে জাতির পিতার শততম জন্মদিন উদযাপন

সোনালী সিলেট ডেস্ক :: নিউইয়র্কের কুইন্স সেন্ট্রালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস ২০১৯ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করা হয়েছে।
নিউইয়র্ক থেকে ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ কথা জানানো হয়।
রোববার নিউইয়র্কের ‘কুইন্স সেন্ট্রাল লাইব্রেরি’র চিলড্রেনস্ ডিসকভারি সেন্টারে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউইয়র্কস্থ কনস্যুলেট জেনারেল এর উদ্যোগে দিবসটি উদযাপিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের কমিশন অন দ্যা স্টাটাস অব উইমেন (সিএসডব্লিউ)-এর ৬৩তম সেশনে অংশগ্রহণ উপলক্ষে নিউইয়র্ক সফররত বাংলাদেশের শিক্ষা উপ-মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত শতাধিক বাঙালি শিশু-কিশোর অংশগ্রহণে কুইন্স সেন্ট্রাল লাইব্রেবির চিলড্রেনস্ ডিসকভারি সেন্টার এসময় শিশুমেলায় পরিণত হয় ।
মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, “যেভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার শিশুরা লেনসন ম্যান্ডেলাকে জানবে, যেভাবে ভারতের শিশুরা মহাত্মা গান্ধীকে জানবে, ঠিক তেমনিভাবেই বাংলাদেশের শিশুরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জানবে। জাতির পিতা তাঁর অবিসংবাদিত নেতৃত্বের মাধ্যমে জেল, জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন, কারাবরণ সহ্য করে আমাদের শিশুদের জন্য এক স্বপ্নময় স্বাধীন-স্বার্বভৌম বাংলাদেশ উপহার দিয়ে গেছেন। তাই দেশ ও প্রবাসের সব বাঙালি শিশুরা জাতির পিতার আদর্শ ধারণ করে বড় হয়ে উঠবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
তিনি শিশুদেরকে বাংলায় ও ইংরেজিতে প্রকাশিত ‘মুজিব গ্রাফিক্স নভেল’ পাঠ করার পরামর্শ দেন এবং কুইন্স লাইব্রেরিতে বইটি অন্তর্ভুক্ত ও সংরক্ষণ করার জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান। এ অনুরোধে সাড়া দেন কুইন্স লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ।
বিশেষ অতিথি বক্তৃতাকালে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত শিশুদেরকে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ থেকে অংশবিশেষ পাঠ করে শোনান।
স্থায়ী প্রতিনিধি বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, শিশুর জীবন করো রঙ্গিন’ উল্লেখ করে সবাইকে শিশুদের জীবনকে আরও রঙ্গিন করতে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তৃতায় নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের কনসাল জেনারেল মিজ্ সাদিয়া ফয়জুননেসা জাতির পিতার জন্মদিন এবং বাংলাদেশের জাতীয় শিশু দিবসের এই আয়োজনের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ধারাকে সম্পৃক্ত করার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, “এর মাধ্যমে জাতির পিতার বিশ্বজনীনতা আরও বিকশিত হচ্ছে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে তাঁর আদর্শ সঞ্চারিত হচ্ছে”।
কনসাল জেনারেল আরও জানান কুইন্স লাইব্রেরিতে জাতির পিতার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ এবং ‘কারাগারের রোজনামজা’ বই দুটি সর্বজনের পাঠের জন্য সরবরাহ করা হয়েছে এবং তা এখানেও প্রদর্শিত হচ্ছে।
এছাড়া ইতোমধ্যে কুইন্স লাইব্রেরিতে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বইসহ বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য সম্বলিত বই দিয়ে ‘বাংলা সেন্টার’ স্থাপন করার জন্য লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষের সাথে কনস্যুলেট জেনারেল অফিস কাজ করছে।
বঙ্গবন্ধু কীভাবে কারাগারে থেকে শেখ রাসেলের সাথে যোগাযোগ করতেন এবং রাসেল কীভাবে বঙ্গবন্ধুর অভাব উপলব্ধি করতেন তা জাতির পিতার “কারাগারের রোজনামচা” বই থেকে শিশুদের উদ্দেশ্যে পাঠ করে শোনান তিনি।
কুইন্স লাইব্রেরির প্রতিনিধি মাহেন্দ্র ইন্দ্রজিৎ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল ও জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের সাথে যৌথভাবে কাজ করতে পেরে কুইন্স লাইব্রেরি সমৃদ্ধ হচ্ছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সাথে আমাদের এই সাংস্কৃতিক বিনিময় অব্যাহত থাকবে”।
দিবসটি উপলক্ষে শিশুদের জন্য চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজনের পাশপাশি শিশুদের উপস্থাপনা ও পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পর্বটি উপস্থিত সুধিজনের ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করে।
চিত্রাঙ্কণ ও রচনা প্রতিযোগিতায় স্থানীয় প্রবাসী বাঙালি, বাংলাদেশ মিশন ও কনস্যুলেট পরিবারের ৭৫ জন শিশু অংশগ্রহণ করে।
উপমন্ত্রী চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুদের মাঝে “বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতি সম্বলিত ক্রেস্ট” এবং অংশগ্রহণকারী অন্যান্য শিশুদের মেডেল প্রদান করেন।
চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতায় ক-গ্রুপে প্রথম স্থান অধিকার করে শিশু শ্রেষ্ঠা দেবনাথ এবং খ-গ্রুপে শিশু অপর্ণা আমিন। রচনা প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে নির্ঝর দেবনাথ। পুরস্কার বিতরণ শেষে সমবেত শিশুরা কেক কেটে জাতির পিতার জন্মদিন উদযাপন করে।
এর আগে সকালে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল নিজ-নিজ কার্যালয়ে জাতির পিতার শততম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস ২০১৯ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ, আলোচনা সভা এবং জাতির পিতাসহ ১৫ আগস্টের সব শহীদ, জাতীয় চার নেতা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাগণের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং বাংলাদেশের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা হয়।
অনুষ্ঠানটি নিউইয়র্ক প্রবাসী বিশিষ্ট বাংলাদেশী নাগরিকগণ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনসহ বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, শিক্ষাবিদ, শিল্পী, সাংস্কৃতিক কর্মী, সমাজসেবক ও মিডিয়া প্রতিনিধিসহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।
image_print

সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন
0Shares
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম