সিলেট ৭ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১৮ই জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি
প্রকাশিত: ৫:১৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৫, ২০১৮
ডেস্ক প্রতিবেদন
দেশের মাটিতে কোনো ভেন্যুর অভিষেক টেস্ট কখনো জিততে পারেনি বাংলাদেশ।
তাইজুল ইসলামের আরেকটি জাদুকরি বোলিং। আরেকটি পাঁচ উইকেট-কীর্তি। তাতে দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়েকে বেঁধে রাখা গেল ১৮১ রানে। কিন্তু প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ের ১৩৯ রানের লিড তো তখনো জ্বালা বাড়াচ্ছে বাংলাদেশের। সিলেট টেস্টে স্বাগতিকদের ল্য যে প্রায় আকাশছোঁয়া, ৩২১ রান।
বাংলাদেশের সামনে পথ দুটোই খোলা। হয় জয়, নয়তো পরাজয়। মাঠে খেলা হলে ড্রয়ের চিন্তা করা বোকামিই! সিরিজের প্রথম টেস্টের ভাগ্য নির্ধারণে হাতে সময় পাক্কা দুই দিন। তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ বিনা উইকেটে ২৬ রান। জয় থেকে এখনো ২৯৫ রান দূরে বাংলাদেশ। আর জিম্বাবুয়ের দরকার ১০ উইকেট।
কঠিন চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের সামনে। জিততে হলে নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড গড়তে হবে বাংলাদেশ। চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান ৪১৩ হলেও এত বিশাল রান করে জয়ের রেকর্ড নেই। সর্বোচ্চ ২৮৫ রান করে ম্যাচ ড্র করেছিল জিম্বাবুয়ের বিপে ২০০৫ সালে ঢাকায়। আর ২১৭ রান করে জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপে ২০০৯ সালে।
বাংলাদেশের ভয়ের কারণ ভিন্ন জায়গায়। নিকট অতীতে প্রথম ইনিংস কিংবা দ্বিতীয় ইনিংসে দুইশ রান করতে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ। সবশেষ দলীয় রান দুইশ পেরিয়েছিল সাত ইনিংস আগে! তাইতো ল্য নাগালের অনেক বাইরে। তবুও লিটন ও ইমরুলের আত্মবিশ্বাসী শুরু কিছুটা হলেও সাহস জোগাচ্ছে।
ল্য তাড়া করতে নেমে ১০.১ ওভারে কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে জমা হয়েছে ২৬ রান। আলোকস্বল্পতায় ৪টা ২৩ মিনিটে তৃতীয় দিনের খেলা বন্ধ হয়। ১২ মিনিট পর দিনের খেলা শেষ করে দেন আম্পায়াররা। চতুর্থ দিনের খেলা ৩০ মিনিট এগিয়ে সকাল সাড়ে নয়টায় শুরুর সিদ্ধান্তও নিয়েছেন আম্পায়াররা।
এর আগে জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংসে ছিল তাইজুলের দাপট। আবারো পাঁচ উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়েকে স্পিন বিষে নীল করেছেন বাঁহাতি এই স্পিনার। অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ ৩টি এবং নাজমুল পেয়েছেন ২ উইকেট।
সোমবার সকালে দুই প্রান্ত থেকে বোলিং শুরু করেন আবু জায়েদ রাহী আর তাইজুল। পেসার রাহীকে বেশিণ আক্রমণে রাখেননি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তাতে লাভই হয়েছে। অষ্টম ওভারে রাহীর পরিবর্তে আসেন মিরাজ। দিনের দশম ওভারে মিরাজ এনে দেন প্রথম সাফল্য। ম্যাচের প্রথম উইকেট পান ব্রায়ান চারিকে ফিরিয়ে। ডানহাতি স্পিনারের টার্নের বিপরীতে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন চারি। প্রথম ঘন্টায় বাংলাদেশের সাফল্য ব্রায়ান চারির উইকেট।
দ্বিতীয় ঘন্টার শুরুতে তাইজুলের আঘাত। পানি পানের বিরতির পর দ্বিতীয় বলে আউট ব্রেন্ডন টেলর। বেচারা টেলর। দুই ইনিংসেই দুটি ভালো ক্যাচ তাকে দেখিয়েছে সাজঘরের পথ। ২৫ বলে ২৪ রান করা টেলর লং অন দিয়ে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন। ব্যাটে-বলে ঠিকমতো সংযোগ হয়নি। তাইতো বেশ খানিকটা দৌড়ে গিয়ে লং অনে বল তালুবন্দি করেন ইমরুল।
প্রথম সেশনে ২ উইকেট হারালেও জিম্বাবুয়ে রান তুলেছে দ্রুতগতিতে। ৩০ ওভারে স্কোরবোর্ডে যুক্ত করে ৯০ রান। স্পিন আক্রমণে বেশি সতর্ক হয়ে খেলছিলেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। তাকে সমর্থন করছিলেন শন উইলিয়ামস। তাইতো প্রথম সেশনেই তাদের লিড ২৩০ রান।
প্রথম সেশনে দ্রুত রান তুললেও বিরতির পর রানের চাকায় লাগাম টানেন বাংলাদেশের স্পিনাররা। বিরতির পর পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে মাসাকাদজা আউট। হাফ সেঞ্চুরি থেকে ২ রান দূরে থাকতে মিরাজের বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক।
প্রথম ইনিংসের সেরা ব্যাটসম্যান উইলিয়ামস প্রথম সেশনে দাপট দেখালেও দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই সাজঘরে ফেরেন। রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বল মিস করে বোল্ড হন। তাকে ফেরান তাইজুল। পরের বলে আবার সাফল্য এই বাঁহাতির। উইকেটের সামনে ও পেছনে বাড়তি ফিল্ডার এনে চাপ তৈরি করেন মাহমুদউল্লাহ। উইকেটের সামনে সিলি পয়েন্টে লিটন, পেছনে মুমিনুল। ফিল্ডার পজিশন মার্ক করে তাইজুলের দুর্দান্ত বল। ডিফেন্স করতে গিয়ে লিটনের হাতে ক্যাচ দেন প্রথম ইনিংসে অপরাজিত থাকা পিটার মুর। মাসাকাদজার বিদায়ে উইকেটে আসা সিকান্দার রাজা দ্রুত ২৫ রান তুললেও বেশিণ টিকতে পারেননি। তাইজুলের বলে রাজা যখন বোল্ড হন, তখন জিম্বাবুয়ের রান ৬ উইকেটে ১৩০।
রাজার উইকেট নিয়ে ম্যাচে ১০ উইকেট পূর্ণ করেন তাইজুল। তার আগে টেস্টে দেশের হয়ে ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন এনামুল হক জুনিয়র, সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। সাকিব অবশ্য এমন কীর্তি গড়েছেন দুবার।
জিম্বাবুয়েকে ১৩০ রানে আটকে দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও তা হয়নি। ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ও রেগিস চাকাভা ৩৫ রানের জুটি গড়েন সপ্তম উইকেটে। চা বিরতির পর মিরাজ ভাঙেন জুটি। প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে তার শিকার মাসাকাজদা। প্রথম স্পেলে নাজমুল কোনো উইকেট না পেলেও বিরতির পর এক ওভারে তুলে নেন দুই উইকেট। তার শিকার চাকাভা ও ব্রেন্ডন মাভুতা। জিম্বাবুয়ের শেষ উইকেটটা নেন তাইজুল। চাতারার উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো উভয় ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন তাইজুল।
প্রথম ইনিংসে বোলিং সাফল্য ম্লান হয়েছিল ব্যাটিং ব্যর্থতায়। এবারও বোলাররা ল্য অনেকটা নাগালেই রেখেছেন। যদিও জিততে হলে গড়তে হবে রেকর্ড। আর হারলে বিপদ!
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুনপ্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ তাজুল ইসলাম,
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নাঈমুর রহমান নাঈম
উপদেষ্টা : উস্তার আলী
সম্পাদক কর্তৃক বার্তা অফসেট প্রেস, লিয়াকত ভবন, জল্লারপাড় রোড, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও প্রধান কার্যালয় : সামসুদ্দিন মার্কেট,(২য় তলা) পুরাতন পুলের মুখ ভার্থখলা,দক্ষিণ সুরমা সিলেট থেকে প্রকাশিত।
ফোন : ০২৯৯৬৬৩২৩০১
মোবাইল : ০১৭১১-৩৯৯৬৬৬, ০১৭৩৩-৫৭৫৯২০ (সম্পাদক ও প্রকাশক)
ই-মেইল : sonalysylhet2016@gmail.com
Web : www.sonalysylhet.net
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি