সিলেট ২৭শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই ফাল্গুন, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ | ১৫ই রজব, ১৪৪২ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:৩০ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৯
সোনালী সিলেট ডেস্ক :::ঘরের আড়ার সঙ্গে গৃহবধূর লাশ ঝুলছিল। এই অবস্থায় সটকে পড়েন স্বামী। গৃহবধূর স্বজনেরা তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ করছেন। স্বজনেরা থানায় মামলা করতে চাইলে পুলিশ জানায়, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এরই ফাঁকে ওই গৃহবধূর স্বামী সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে পাড়ি জমিয়েছেন। মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সদর জায়ফরনগর ইউনিয়নের পূর্ব বেলাগাঁও গ্রামে সোমবার এ ঘটনা ঘটে।
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পূর্ব বেলাগাঁও গ্রামের বাসিন্দা দুবাইপ্রবাসী সাইফুর রহমানের (২৮) সঙ্গে ২০১৩ সালের ১২ আগস্ট পাশের সাগরনাল ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া গ্রামের আবদুল হান্নানের মেয়ে আয়েশা আক্তারের (২২) বিয়ে হয়। ছয় বছরের দাম্পত্য জীবনে তাঁদের কোনো সন্তান ছিল না। মাসখানেক আগে সাইফুর ছুটি পেয়ে বিদেশ থেকে দেশে ফেরেন। বাড়িতে আলাদা একটি ঘরে স্বামী-স্ত্রী থাকতেন। পাশের ঘরে সাইফুরের বড় ভাই কাতারপ্রবাসী জাকির হোসেনের স্ত্রী-সন্তানেরা থাকেন। গতকাল সকালে জাকিরের স্ত্রী হাসিনা বেগম ঘুম থেকে জেগে দেবর সাইফুরকে ঘরের বাইরে থেকে আয়েশাকে ডাকাডাকি করতে দেখেন। সাইফুর তাঁকে (হাসিনাকে) বলেন, তিনি ফজরের নামাজ পড়তে পাশের মসজিদে গিয়েছিলেন। একপর্যায়ে সাইফুর ভেতর থেকে সাড়াশব্দ না পেয়ে ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলে ফেলেন। এ সময় তাঁরা ঘরের আড়ার সঙ্গে আয়েশার লাশ ঝুলতে দেখেন। এরপর সাইফুর বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। হাসিনার চিৎকার শুনে আশপাশের লোক ছুটে যান। খবর পেয়ে জুড়ী থানার পুলিশ গিয়ে আয়েশার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার জেলা সদরে ২৫০ শয্যার হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনেরা লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরে পারিবারিক গোরস্থানে তাঁকে দাফন করেন।
আয়েশার মৃত্যুর খবর পেয়ে সোমবার ঘটনাস্থলে ছুটে যান তাঁর বাবা আবদুল হান্নানসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা। এ সময় হান্নান গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, সন্তান না হওয়ায় সাইফুর প্রায়ই তাঁর মেয়ের ওপর মানসিক নির্যাতন চালাতেন। দ্বিতীয় বিয়ে করবেন বলেও শাসাতেন। এর জের ধরে আয়েশাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
মঙ্গলবার দুপুরে হান্নান বলেন, আয়েশাকে হত্যার ঘটনায় তাঁরা সোমবার থানায় মামলা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার আগে তা নেওয়া যাবে না বলে পুলিশ জানিয়ে দেয়। এ দিকে আয়েশার স্বামী সাইফুর ওই দিন রাতেই দুবাইয়ের চলে গেছেন। দুবাইয়ে থাকা আত্মীয়স্বজন বিষয়টি তাঁদের নিশ্চিত করেছেন। এখন তাঁরা মৌলভীবাজারের আদালতে মামলা করবেন।
জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় আয়েশার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। তবে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর দুটি পা কাপড়ের টুকরা দিয়ে পেছন দিকে বাঁধা ছিল। আয়েশার স্বামীকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে সোমবার একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে সাইফুরের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। সাইফুরের ভাবি হাসিনা বেগম বলেন, সন্তান না হওয়ায় নির্যাতনের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। সাইফুর কোথায় গেছেন সেটাও তাঁর জানা নেই।
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুনপ্রধান সম্পাদক : মোঃ উস্তার আলী,
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ তাজুল ইসলাম,
বার্তা সম্পাদক : আব্দুল খালিক।
সম্পাদক কর্তৃক বার্তা অফসেট প্রেস, লিয়াকত ভবন, জল্লারপাড় রোড, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও ৩/১৭, সুরমা মার্কেট (২য় তলা), সিলেট থেকে প্রকাশিত।
মোবাইল : ০১৭১১-৩৯৯৬৬৬, ০১৭৩৩-৫৭৫৯২০ (সম্পাদক ও প্রকাশক)
০১৭২২-৯৪০২১৬ (বার্তা সম্পাদক)।
ই-মেইল : sonalysylhet2016@gmail.com
Web : www.sonalysylhet.net
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি