রুহুল আমীন তালুকদারঃ : সনাত্বন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। মহা ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে কাল থেকে শুরু হতে যাচ্ছে দুর্গা মায়ের পূজার উৎসব। রঙের আঁচড়ে দুর্গা মাকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে নানা রঙে। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠিত ২০২২ খ্রি: এ মায়ের পূজার আয়োজন উপলক্ষে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী হিন্দু পরিবারের কৃতি সন্তান বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর গৌরবোজ্জল সিলেট রেঞ্জের বিয়ানীবাজার থানায় কর্মরত সৎ, দায়িত্বশীল, ন্যায়পরায়ণ-কর্মপরায়ণ চৌকস অফিসার ইনচার্জ হিল্লোল রায় সিলেটবাসীসহ দেশ ও বিশ্বের সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সার্বজনীন দুর্গামায়ের পূজার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
৩০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার এক শুভেচ্ছা বার্তায় অফিসার ইনচার্জ হিল্লোল রায় বলেন, সার্বজনীন দুর্গাপূজাই শারদোৎসবের প্রধান আকর্ষণ। জাতি-ধর্ম-বর্ণ, নির্বিশেষে সবাই এ পূজার আনন্দ উপভোগ করে থাকেন। বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের এটি ধর্মীয় বৃহৎ উৎসব হিসেবে পরিচিত এবং ক্রমান্বয়ে রূপান্তরিত হয়েছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের জাতীয় উৎসবে।
দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতায় বাঙালি সংস্কৃতি এবং বাঙালির সামগ্রিক সমাজ ব্যবস্থার বাস্তব রূপ লক্ষ্য করার মতো। আমাদের দেশের বাঙালি বধূরা যেমন সন্তান-সন্তুতি নিয়ে বাপের বাড়ি যান, ঠিক তদ্রুপ মা দুর্গা তার ছেলে শৌর্ষ বীর্যের, প্রতীক-কার্তিকয়ের ও সিদ্ধিদাতা গনেশ এবং মেয়ে ধনদাত্রী লক্ষ্মী ও বিদ্যাদায়িনী সরস্বতীকে নিয়ে বাপের বাড়িতে আসেন। কয়েকদিনের জন্য আবার ফিরে যান স্বামীগৃহে। পরিবার সমেত মায়ের প্রতিমার দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যায়, বিশ্বব্রহ্মান্ডের সব কিছুই সে কাঠামোর মধ্যে নিহিত রয়েছে। মনুষ্যজগত, পশুজগত, পংক্ষিজগত, সরীসৃপজগত, উদ্ভিদজগত, হিমালয়দুহিতা, কৈলাসপতিগৃহিনী হৈমবতী, নদীরূপে সরস্বতী এবং সমুদ্র সম্ভবতা লক্ষ্মীর মধ্যে যে পৃথিবীর নদী ও সমুদ্রসমূহকে তার সাম্রাজ্যের অঙ্গ করেছে। মুষিকবাহন গণপতি ভূমি ও ভূমি তলে বিচরণকারী কিন্তু ময়ূরবাহন কার্তিকেয়র স্বর্গ-মর্ত্য আন্তরিক্ষ সর্বত্র নির্বাধগতি। সুতরাং স্বর্গ-মর্ত্য, আন্তরিক্ষের কীটপতঙ্গ এমনকি ঘৃণিত অসুরও মায়ের চরণতলে স্থান পেয়েছে। অর্থাৎ বিশ্বব্রহ্মান্ডের কেউ মায়ের পরিবার বর্হিভূত নয়। এক দিকে শিব- কল্যাণ দাতা অপর দিকে দুর্গা-দুর্গতনাশিনী। জীবনে কল্যাণ তখনই নেমে আসে যখন গণপতির গণ সংহতি বা ঐক্যশক্তি, লক্ষ্মীর ধনশক্তি, সরস্বতীর জ্ঞানশক্তি এবং কার্তিকেয়ের বীর্যশক্তি সমন্বিত হয়। তখনই জীবনে দুর্গার অধিষ্ঠান হয়। অর্থাৎ সব দুর্গতির অবসান হয়। অসুর দমনে এবং দুংখ- দুর্গতি নাশে দেবতা ও মানব উভয়েরই মা দুর্গার পূজা করার বিধান আছে।এজন্যই বাংলায় মা দুর্গা স্বপরিবার পূজিত হন।
তাই মাতৃরূপে ঈশ্বরের আরাধনা করতে হবে ভগবানকে মাতৃরূপে আরাধনার কথা মার্কেন্ডেয় পুরাণে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। গীতাতেও ভগবান বলেছেন আমি জগতের মাতা, হিন্দু অধ্যষিত বিশ্বসমাজ মায়ের ভালোবাসায় মুগ্ধ। ঈশ্বর সবজীবের মা হয়ে বিরাজ করেন। মাতৃভাবে ঈশ্বরের আরাধনা তাই স্বাভাবিক। মানুষ দম্ভ-অহংকার, কাম-ক্রোধ ও লোভের বশবর্তী হয়ে দুঃখের সাগরে নিমজ্জিত হয়। একাগ্রচিত্তে মাতৃরূপ মহামায়া দুর্গাপূজায় মানুষ এসব আসুরিকতা হতে মুক্তি পেয়ে সুরথ রাজার মতো নির্বিঘ্নে জীবন-সংসারের ঐশ্বর্য ভোগ করে পরম সুখি হতে পারে। আবার মুক্তিকামী হয়ে সমাধি বৈষ্যের মতো মুক্তি লাভের আশায়।সিলেটসহ দেশের বাঙালি ও বিশ্বজুড়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সার্বজনীন দুর্গা মায়ের পূজার শুভেচ্ছা