মজনু-রহিমার দাপটে দক্ষিণ সুরমায় শিলং তীর ও মাদকের স্বর্গরাজ্য

প্রকাশিত: ৯:০৯ অপরাহ্ণ, মে ২২, ২০২২

 

বিশেষ প্রতিবেদক
সিলেট দক্ষিণ সুরমার ক্বীন ব্রীজের নিচ, শফিক মিয়ার কলোনী, সুইপার কলোনী, চাঁদনীঘাট, জিঞ্জিরশাহ মাজার এলাকা, টেকনিক্যাল রোডের বিভিন্ন কলোনী ও রেলওয়ে স্টেশন এলাকা যেনো মাদক ও শীলং তীরের স্বর্গরাজ্য। এই স্পটগুলোকে কেন্দ্র করে চলছে মাদক ব্যবসা, জুয়ার আসর, শীলং তীর, ছিনতাইকৃত মোবাইল ফোন কেনা-বেচাসহ নানান অপকর্ম। কলোনীগুলোতে চলে মাদকের রমরমা ব্যবসা ও পতিতাদের জমজমাট হাট। এ নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় ভার্থখলা, ঝালোপাড়া ও খোজারখলা বাসিন্দাদের মাঝে।

এলাকাবাসীর দাবী দক্ষিণ সুরমার টার্মিনাল পুলিশ ফাড়ির উৎকোচ বাণিজ্যের কারণে স্পটগুলোতে এমন অপকর্ম চলছে। তারা মাসিক বখরা নিয়ে সব রকম অপরাধ দেখেও না দেখার ভান করছেন। যার ফলে অপরাধীরা আরও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। নতুবা পুলিশের হাতের নাগালে কিভাবে এমন অপরাধ সংঘটিত হতে পারে?
স্থানীয়রা ক্ষোভের সাথে জানান, নগরের প্রবেশদ্বার খ্যাত এই ক্বীনব্রিজের নীচে প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে গাজা, চোলাই মদ, বিদেশী মদ, ইয়াবা ট্যাবলেট, ডেন্ডি ও ফেনসিডিলসহ হরেক রকম নেশাদ্রব্য। সেই সাথে রয়েছে বেশ কয়েকটি শিলং তীরের বোর্ড। অনেকটা রাখ-ডাক ছাড়াই প্রকাশ্যে চালানো হচ্ছে গাজা ব্যবসা। এছাড়াও রয়েছে চোর ও ছিনতাইকারীদের গোপন আস্তানা।

প্রত্যেক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায়- দীর্ঘদিন থেকে ভার্থখলা মাদ্রাসার পিছনে শফিক মিয়ার কলোনীতে প্রকাশ্যে শিলং তীরের বোর্ড বসিয়ে মানুষের লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে জুয়াড়িরা। মজনু, রহিমা, নাজমা আক্তার নাজু, মায়া, সুফিয়া শিকদারনি-সহ নাম না জানা অনেকে মিলেমিশে বিভিন্নভাবে মাদক ও জোয়ার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এ সব নিয়ে বিভিন্ন সময় দৈনিক, সাপ্তাহিক, অনলাইন পত্রিকাসহ ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় অনেকবার প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
অপরাধিরাও মাঝে মধ্যে ধরা পড়ে কিন্তু বিধিবাম ধরাপড়ার এক-দুইদিনের ভিতরেই তারা জামিনে ছাড়া পেয়ে পুরোনো ব্যবসা নতুন করে গড়ে তুলে। কারন থানা পুলিশের সাথে আগে থেকেই তাদের কথা বার্তা পাকা করা থাকে যাতে ধরা পড়লেই সাধারণ কোন ধারা দিয়ে কের্টে চালান দেয়া হয়। এতে করে অল্প দিনের ভিতরে তারা জামিনে ছাড়া পেয়ে আবার তার পুরোনো ব্যবসা আগের চেয়ে বড় পরিসরে চালিয়ে থাকে।

এদিকে শিলং তীর বোর্ডের মালিক মজনু ও রহিমা সম্পূর্ন প্রশাসনিক ও মিডিয়া নিরাপত্তা নিয়ে শীলং-তীর ও গাজার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যপারে মজনু ও রহিমার কাছে পরিচয় গোপন রেখে তীরের বোর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে সে বলে, কে কি করবে? প্রশাসন ও মিডিয়া কর্মিদের বড় করে মাল দেই তাতে আমার বিষয়টি সব সময় অন্যভাবে দেখে। আমাদের এখানে পুলিশ আসার আগেই আমাদেরকে গ্রীন সিগনাল দিয়েই আসে। টার্মিনাল পুলিশ ফাঁড়িকে সপ্তাহে ১০হাজার টাকা করে চাঁদা দিয়ে ব্যবসা করি এবং সাংবাদিকদের ও নিয়মিত টাকা দেই, সে জন্য আমার বোর্ড চালাতে কোন প্রকার সমস্যা হয়না। এই এলাকার স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, এইসব মাদক ব্যবসায়ী ও দুস্কৃতিকারীর আনাগোনার কারণে আমরা সব সময় আতংকের মধ্যে থাকি। এদের আনাগোনা যাতে বন্ধ হয় সে ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নজর দেওয়ার জন্য তারা অনুরোধ করেন এবং শীলং তীর ও মাদক ব্যবসায়ীদের হাত থেকে নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করতে এখনি আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান । তারা বলেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর না হলে মাদকের ভয়াবহতা এই সমাজকে ধ্বংস করে দিবে।

স্থানীয় লোকদের কাছ থেকে জানা যায়, এখানে মাঝে মধ্যে ডিবি পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে এবং দুই একজনকে গ্রেফতার করলেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অদক্ষতা ও সহযোগিতার কারনে আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে জেল থেকে বেরিয়ে এসে তারা পুনরায় মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। এইতো গত ১৩ তারিখ রাতে র‌্যাব-৯ এর একটি টিম অভিযান পরিচালনা করেছে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি, অপরাধীরা তাদের ব্যবসা ঠিকই চালিয়ে যাচ্ছে।
এখানে শীলং তীর ও মাদক ব্যবসা সময় থাকতে বন্দ না করলে এক সময় স্কুল কলেজ পড়–য়া ছাত্র, যুব সমাজ ও উঠতি বয়সের ছেলেদের ধ্বংশের দিকে ঠেলে দেওয়া হবে বলে স্থানীয় অনেক ব্যবসায়ীরা মন্তব্য করেন । বিস্তারিত পরবর্তি সংখ্যায়—।

 

সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন
0Shares
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম