পরিবারের কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে বাকিদের অবশ্যই যা করতে হবে

প্রকাশিত: ৭:২২ অপরাহ্ণ, জুলাই ২০, ২০২০

পরিবারের কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে বাকিদের অবশ্যই যা করতে হবে

প্রতীকী ছবি


সোনালী সিলেট ডেস্ক
আক্রান্ত ব্যক্তির ঘরে গরম পানি, চা বা স্যুপ জাতীয় পানীয় ও কিছু শুকনো খাবার দিয়ে রাখতে হবে, যেন ওই ঘরটিতে বারবার যেতে না হয়

 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা অনুযায়ী, প্রত্যেক কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তি গড়ে দুইজনের বেশি মানুষের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণ ঘটাচ্ছেন। তবে বিভিন্ন দেশ ও ভৌগলিক অঞ্চলভেদে এই হিসেব কিছুটা আলাদা হতে পারে। সেক্ষেত্রে পরিবারের লোকজনের অবশ্যই কিছু সতর্কতা গ্রহণ করতে হবে।

 

আক্রান্ত ব্যক্তিকে সম্পূর্ণ আইসোলেশনে রাখুন :
পরিবারের কেউ আক্রান্ত হয়েছেন বুঝলে ওই ব্যক্তির সঙ্গে বাড়ির অন্যদের দূরত্ব নিশ্চিত করুন। তাতে অন্যদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো যাবে। এক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলাদা একটি ঘরে রাখুন।

 

তার খাবার, অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও ওষুধ ঘরের দরজায় দিয়ে রাখলে তিনি সেখান থেকে নিয়ে নিতে পারবেন। খাওয়া শেষে আবার দরজায় দিয়ে রাখলে সেগুলো সংগ্রহ করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তি যে টয়লেটটি ব্যবহার করবেন, সেটি আলাদা হলে ভালো।

 

তবে সম্ভব না হলে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহারের অন্তত আধঘণ্টা পরে সেটি অন্যরা ব্যবহার করতে পারবে। আক্রান্ত ব্যক্তির ঘরে গরম পানি, চা বা স্যুপ জাতীয় পানীয় ও কিছু শুকনো খাবার দিয়ে রাখতে হবে, যেন ওই ঘরটিতে বারবার না যেতে হয়।

 

আক্রান্ত ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন :
কোভিড-১৯ রোগের কোন সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। যে কারণে সতর্কতাই সবচেয়ে জরুরি বিষয়। এক্ষেত্রে অসুস্থ ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। উপসর্গ মৃদু হলে বাড়িতে রেখে পরিচর্যা করতে হবে। এজন্য তার তাপমাত্রা, অক্সিজেনের মাত্রা, ব্লাড প্রেশার, অন্য অসুস্থতা থাকলে সেসবও খেয়াল রাখতে হবে।

 

খেয়াল রাখতে হবে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর যাতে পানিশূন্য হয়ে না যায়। শরীরের কোন একটি অবস্থার অবনতি হলে প্রয়োজনে হাসপাতালে নিতে হবে আক্রান্ত ব্যক্তিকে।

 

সেবাদানকারীর বিশেষ সতর্কতা :
আক্রান্ত ব্যক্তি যদি বয়স্ক হন, তাহলে তিনি নিজে নিজে হয়ত সব কাজ করতে পারবেন না, তখন তার ঘরে কাউকে গিয়ে সেবা দিতে হবে।

 

সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে সবাইকে। সেক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তি ও যিনি সেবা দেবেন, উভয়েই মাস্ক পরিধান করবেন।

 

সেবাদানকারী এমন কাপড় পরে ভেতরে যাবেন, যেটা বাইরে এসে সহজে ধুয়ে দেওয়া যায়। সম্ভব হলে তিনি গোসল করে ফেলবেন, না পারলে ভালো করে ঘষেঘষে হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। এক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির কাপড় যদি ধুয়ে দিতে হয়, তাহলে সেটি আধঘণ্টা সাবান পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপর ধুতে হবে।

 

নিজেদের শরীরের খেয়াল রাখুন :
পরিবারের বাকি সদস্যদের নিজেদের শরীরের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। সংক্রমণের কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে কি-না খেয়াল রাখুন। বাড়ির প্রথম ব্যক্তি শনাক্ত হবার পর থেকে অন্তত ১৪ দিন পর্যন্ত সকলেরই নিজেদের অবস্থা মনিটরিং করতে হবে।

 

এই সময়ে আক্রান্ত ব্যক্তির মত বাকি সদস্যদেরও গরম পানি খাওয়া, গার্গল করা ও বারবার হাত সাবান দিয়ে ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে।

 

একইসঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এমন খাবার অর্থাৎ পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। প্রচুর পানি পান করুন। নিয়মিত ব্যায়াম, বিশেষ করে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করারও পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।

 

জরুরি অবস্থার প্রস্তুতি রাখুন :
যেকোনও সময় আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিতে হতে পারে, সেই প্রস্তুতি রাখুন। এজন্য জরুরি ফোন নম্বর হাতের কাছে রাখুন, হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স বা গাড়ি, চিকিৎসক তাৎক্ষণিকভাবে যাদের প্রয়োজন হবে, তাদের ফোন নম্বর কোথাও লিখে রাখতে পারেন।

 

জরুরি পরিস্থিতির জন্য কিছু টাকা জোগাড় করে রাখুন, যাতে হঠাৎ প্রয়োজনে বিপদে না পড়তে হয়।

 

চিকিৎসকের পরামর্শ নিন :
যেকোনও প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সামাজিক মাধ্যমে দেখা প্রেসক্রিপশন অনুসরণ করা যাবে না। তবে অহেতুক ভয় না পাবার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। সেইসঙ্গে মানসিকভাবে সুস্থ থাকার চেষ্টা করতে হবে এবং প্রয়োজনে মনোবিদের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন
0Shares
সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম